এসইও অথবা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন । এসইও কি? অনলাইন মার্কেটিং এ এসইও কিভাবে কাজ করে? এসইও এমন একটি সিস্টেম যেটিকে ব্যবহার করে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটকে সার্চ লিস্টে সবার প্রথমে দেখানোর জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়। মনে করেন আপনার একটি ওয়েবসাইট রয়েছে কিন্তু আপনার ওয়েবসাইটে নাম লিখে সার্চ করলে সার্চ লিস্টে অনেক পরে আপনার ওয়েবসাইট দেখা যায়। আর আপনার ওয়েবসাইট কে সার্চ লিস্টে যাতে করে সবার প্রথমে দেখা যায় সেই জন্য এসইও অথবা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
যতদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ঠিক ততই ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। যার কারণে বর্তমানে এসইও এর চাহিদা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। অনেক ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যারা এসইও শিখে মাসে প্রায় লক্ষাধিক টাকা উপার্জন করছেন।

SEO কি? এসইও কিভাবে কাজ করে? ২০২৫ সালে কিভাবে কাজ করবে?
সার্চ ইঞ্জিন কি?
এসইও কিভাবে কাজ করে সেই সম্পর্কে আমরা জানতে পারলাম।এখন আমাদের জানতে হবে সার্চ ইঞ্জিন কি? আমরা যদি সার্চ ইঞ্জিন কোন কিছু লিখে সার্চ করি তাহলে আমাদের মাঝে অনেকগুলো ওয়েবসাইট চলে আসে। পরবর্তীতে আমরা ওয়েবসাইট গুলো থেকে আমাদের প্রয়োজন মোতাবেক তথ্য সম্পর্কে জেনে নি। সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোন কিছু সম্পর্কে জানতে যেখানে সার্চ করি সেই মাধ্যমকে সার্চ ইঞ্জিন বলা হয়।
এক কথায় সার্চ ইঞ্জিনে সমস্ত তথ্য মজুদ করা থাকে। মূলত মানুষের কাছে সমস্ত তথ্য উপস্থাপন করার জন্যই সার্চ ইঞ্জিন তৈরি করা হয়েছে। আমরা যদি আমাদের কোন সমস্যার কথা লিখে সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করি তাহলে সার্চ ইঞ্জিন যে ওয়েবসাইটে তথ্য যথাযথ মনে করে সেই ওয়েবসাইট আমাদের মাঝে উপস্থাপন করে।
এসইও কত প্রকার?
আপনারা হয়তো মনে করেন সার্চ ইঞ্জিন অপ্তিমাইজেশন কে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। কিন্তু মৌলিক ভেদে এসইও কে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন,
- অন পেজ এসইও
- অফ পেজ এসইও
- টেকনিক্যাল এসইও
এর পাশাপাশি আবার কাজের পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে এসইও কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন,
- হোয়াইট হ্যাট এসইও
- ব্ল্যাক হ্যাট এসইও
আবার লোকেশনের ওপর ভিত্তি করে এসইও কে দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন,
- লোকাল এসইও
- গ্লোবাল এসইও
অন পেজ এসইও
মূলত ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে সবার প্রথমে আনার জন্য ওয়েবসাইটের পেজের মধ্যে যেই কনটেন্ট গুলো নিয়ে কাজ করা হয় তাকে সাধারণত অন পেজ এসইও বলা হয়ে থাকে। অন পেজ এসইও কে মূলত এসইওর প্রথম ধাপ বলা হয়। অন পেজ এসিও করতে গেলে বেশ কয়েকটি পদ্ধতি এবং নিয়ম কারণ অবলম্বন করে কাজগুলো সম্পন্ন করতে হয়। যেমন,
- ফোকাস কিওয়ার্ড
- মেটা ডিসক্রিপশন
- ইউ আর এল
- সাব হেডিং
- LSI কীওয়ার্ড ব্যবহার
- Alt-text ব্যবহার
- ইন্টার্নাল লিংকিং
- এক্সটার্নাল লিংকিং ইত্যাদি
অফ পেজ এসইও
মূলত ওয়েবসাইট কে সার্চ ইঞ্জিনে সবার প্রথমে আনতে ওয়েবসাইটের বাহিরে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় তাকে অফ পেজ এসইও বলা হয়। এক কথায় ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে সবার প্রথমে আনতে যদি ওয়েবসাইটের ইউআরএল অন্য কোন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অথবা প্লাটফর্মে শেয়ার করা হয় তাকে অফ পেজ এসইও বলে।
মূলত অফ পেজ এসইও এর ক্ষেত্রে সব থেকে কার্যকরী উপায় হিসেবে ব্যাকলিংক কে ব্যবহার করা হয়। যদি আপনার ওয়েবসাইটে বেশি পরিমাণে ব্যাক লিঙ্ক থাকে তাহলে খুব সহজে আপনার ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্টে সবার প্রথমে চলে আসবে।
টেকনিক্যাল এসইও
মূলত অন পেজ এসইওর মত টেকনিক্যাল এসইও কাজগুলো সাধারণত ওয়েবসাইটের ভিতরে সম্পন্ন করতে হয়। ওয়েবসাইটে অর্গানিকভাবে রেংকিং এবং ভিজিটর বৃদ্ধি করতে টেকনিক্যাল এসইও খুবই কার্যকরী।
হোয়াইট হ্যাট এসইও
গুগলের সমস্ত অ্যালগরিদম মেনে চলে এবং সঠিক নিয়ম অনুযায়ী ওয়েব সাইট রাঙ্কে নিয়ে যেতে যে পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় তাকে হোয়াইট হ্যাট এসইও বলে। সহজ ভাষায় বলতে গেলে ওয়েবসাইট রাংকে নিয়ে যেতে হলে গুগলের কিছু নির্দেশনা মেনে চলতে হয়,আর এই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করাকে হোয়াইট হ্যাট এসইও বলা হয়।
ব্ল্যাক হ্যাট এসইও
গুগলের অ্যালগরিদম অনুসরণ না করে এবং গুগলের এলগরিদম ভঙ্গ করে ওয়েবসাইটকে সার্চ ইঞ্জিনে সবার প্রথমে আনতে যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় তাকে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও বলা হয়। তবে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও করে গুগলে ওয়েবসাইট রাঙ্কে আনা খুব সহজ হলেও গুগল বুঝতে পারলে আবার ওয়েবসাইটকে রেংক থেকে নামিয়ে দেয়। পরবর্তীতে ওয়েবসাইট থেকে সার্চ ইঞ্জিনে সামনের দিন আনা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ব্ল্যাক হ্যাট এসইও থেকে দূরে থাকাই ভালো।
লোকাল এসইও
মূলত নিদিষ্ট কাস্টমার অথবা অডিয়েন্সকে টার্গেট করে ওয়েবসাইটের রেজাল্ট কে সার্চ ইঞ্জিনের সবার প্রথমের দিকে আনাতে যে পদ্ধতি ব্যাবহার করে অপ্টিমাইজ করা হয় তাকে আমরা লোকাল এসইও বলি। লোকাল এসইওর পূর্ণরুপ হচ্ছে লোকাল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
গ্লোবাল এসইও
ইন্টারনেট ব্যাবহার করে পুরো বিশ্বব্যাপী যেকোনো বেবশাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যে ধরনের এসইও পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় তাকে গ্লোবাল এসইও বলে। গ্লোবাল এসইওর পূর্ণরুপ হচ্ছে গ্লোবাল সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন।
সচরাচর জিজ্ঞাশিত
প্রশ্নঃ SEO শিখব কিভাবে?
উত্তরঃ ২ ভাবে শেখা যায়। যেমন,
- অনলাইন ওয়েবসাইট হতে
- এবং অভীজ্ঞ ব্যক্তি নিকট হতে শিখে
প্রশ্নঃ এসইও করে কি আয় করা যায়?
উত্তরঃ আয় করা যায় এবং খুবি লাভজনক।
প্রশ্নঃ এস ই ও শিখতে কত দিন লাগে?
উত্তরঃ ৬ মাস থেকে ১ বছর।
প্রশ্নঃ এসইও করে কত টাকা আয় করা যায়?
উত্তরঃ লক্ষাধিক।
প্রশ্নঃ এসইও কাদের শিখতে হবে?
উত্তরঃ প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের মালিককে।
শেষ কথা
সম্পূর্ণ পোস্টের মধ্যে এসইও সম্পর্কে সকল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। আশা করছি সম্পূর্ণ পোস্ট পড়ে আপনি এসইও কিভাবে কাজ করে সেই সম্পর্কে সকল তথ্য পেয়ে গেছেন। পরিশেষে আপনাদের আবারও বলি যে, ভুলেও ওয়েবসাইট রেংকে আনতে ব্ল্যাক হ্যাট এসইও ব্যাবহার করবেন না।